বিশেষ প্রতিবেদন, ৮ ফেব্রুয়ারি: আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা! তারপরেই বাঙালি হিন্দুরা মেতে উঠবেন বাগদেবীর আরাধনায়। চলতি বছরে, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সরস্বতী পুজো (Saraswati Puja)। প্রতিবছরই মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে মহাসমারোহে সম্পন্ন হয় এই পুজো। পাশাপাশি, এই বিশেষ দিনটি বসন্ত পঞ্চমী বা শ্রী পঞ্চমী নামে অভিহিত। এদিকে, ছোটবেলা থেকেই আমরা শুনে আসছি যে সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেতে নেই। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, এটা মনে করা হয় যে, সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেলে বিদ্যার দেবী রেগে যান। কিন্তু আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন, যে কেন এই প্রথা প্রচলিত রয়েছে? বর্তমান প্রতিবেদনে এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করা হল।
রয়েছে পৌরাণিক কাহিনি: মূলত, সরস্বতী পুজোর আগে কুল না খাওয়ার পেছনে রয়েছে বিভিন্ন কারণ। তার মধ্যে একটি পৌরাণিক কাহিনিও রয়েছে। যেটি সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। প্রচলিত কাহিনি অনুযায়ী, বিদ্যার দেবীকে তুষ্ট করার লক্ষ্যে মহামতি ব্যাসদেব বদ্রিকাশ্রমে তপস্যায় বসেছিলেন। এদিকে ওই তপস্যা শুরু করার আগে সেখানে একটি কুলের বীজ রেখে এসেছিলেন দেবী সরস্বতী।
আরও জানুন: Shampoo: ব্যবহার করেন সবাই, অথচ জানেন Shampoo-কে বাংলায় কি বলে? অধিকাংশজনের কাছে নেই এই উত্তর
পাশাপাশি, দেবী স্বয়ং ব্যাসদেবের কাছে এই শর্ত রাখেন যে যতদিনে ওই বীজ অঙ্কুরিত হয়ে বড় গাছ হবে এবং সেই গাছে নতুন কুল হয়ে সেই কুল পেকে ব্যাসদেবের মাথায় পরবে ততদিন তাঁকে এই তপস্যা চালিয়ে যেতে হবে। আর এই বিষয়টি সম্পূর্ণ হলেই দেবী তুষ্ট হবেন। এমতাবস্থায়, দেবীর এই শর্ত মেনে ব্যাসদেব তপস্যা শুরু করেন। আর ওইভাবেই তপস্যা করতে করতে যেদিন তাঁর মাথায় নতুন গাছ থেকে কুল পরে সেদিন তিনি উপলব্ধি করতে পারেন যে, বাগদেবী তাঁর তপস্যায় প্রসন্ন হয়েছেন। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ওই দিনটি ছিল মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথি।
রয়েছে এই কারণগুলিও: আমাদের দেশের কৃষিপ্রধান সামাজিক পরিবেশে কোনো নতুন ফসল থেকে শুরু করে নতুন ফল, প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রথমে তা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করা হয়। আর এই কারণেই নতুন ধান উঠলে পালন করা হয় নবান্ন উত্সব। এমতাবস্থায়, শীতকালে এই সময় কুল গাছে প্রথম ফল ধরার কারণে এই ফল দেবী সরস্বতীকে নিবেদন করেই তাঁর প্রসাদ হিসেবে খাওয়ার প্রথা প্রচলিত রয়েছে বাঙালি হিন্দুদের কাছে। এছাড়াও, সরস্বতী পুজোর সময়ে কুল পাকতে শুরু করে। এদিকে, তার আগে কাঁচা কুল খেলে পেটের সমস্যার হয়ে আশঙ্কা থাকে। এই বিষয়টি মাথায় রেখেও সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেতে বারণ করা হয়।