বিশেষ প্রতিবেদন ৭ ফেব্রুয়ারি: কথায় আছে মাছে-ভাতে বাঙালি! আর তাই তো পাতের পাশে অন্তত এক টুকরো মাছের (Fish) দেখা না পেলে মন ভরে না অনেকের। পাশাপাশি, খাদ্য হিসেবে মাছ অত্যন্ত স্বাস্থ্যকরও বটে। এতে প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণও উপলব্ধ থাকে। কিন্তু, পুষ্টিগুণে ভালো হলেও অত্যধিক পরিমাণে মাছ খেলে আবার থেকে যায় ঝুঁকির সম্ভাবনাও। এমনকি তা ডেকে নিয়ে আসতে পারে বড় বড় রোগকেও। হ্যাঁ, প্রথমে বিষয়টি পড়ে চমকে গেলেও এটা কিন্তু একদমই সত্যি। অর্থাৎ, সোজা কথায় যাঁদের প্রতিদিন মাছ ছাড়া চলে না তাঁদের অবশ্যই কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বর্তমান প্রতিবেদনে এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করা হল।
১. এমন অনেক ধরণের মাছ রয়েছে যেগুলিতে উচ্চ মাত্রায় পারদ থাকে। এদিকে, ওই মাছগুলিকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলে বমি বমি ভাব সহ পেটে ব্যথার মতো সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এদিকে, পারদ অন্ত্রের ভালো ব্যাকটিরিয়ারও ক্ষতি করে। যার ফলে খাবার ঠিক করে হজম হতে সমস্যা হয়। তাই উচ্চ মাত্রার পারদযুক্ত মাছ এড়িয়ে চলা উচিত। এদিকে, কিছু কিছু মাছে আবার সোডিয়াম বেশি থাকার কারণে সেগুলি খেলে পেট ফুলে যেতে পারে। শুধু তাই নয়, হতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যাও। তাই, এই ঝুঁকি কমাতে সোডিয়াম কম রয়েছে এমন মাছ খান এবং রান্নাতেও কম নুন দিন। এর পাশাপাশি মাঝে মধ্যেই ব্লাডপ্রেশার চেক করুন।
২. অনেকেই মনে করেন যে, মাছ খেলে শাক-সবজি খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু, এটি একটি ভুল ধারণা। কারণ, মাছে খুব বেশি ফাইবার থাকে না। এদিকে, শাক-সবজি না খেয়ে অত্যধিক মাছ খেলে পেটে খারাপ ব্যাকটিরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমে ভারসাম্যহীনতা ঘটতে পারে। তাই মাছ বেশি খেলে, তার পাশাপাশি আপনাকে শাকসবজি, ফলমূল এবং গোটা শস্যের মতো ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারও সমানভাবে খেতে হবে।
৩. এদিকে, কিছু কিছু মাছে আবার অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে। সেগুলি অন্ত্রে প্রদাহ বৃদ্ধি করতে পারে এবং ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (IBS)-এর মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই, এমন মাছ খান, যেগুলিতে চর্বি বা ফ্যাটের পরিমাণ খুব কম থাকে। এর পাশাপাশি অনেকের বিভিন্ন মাছে অ্যালার্জি থাকে। এমনকি, সেইসব মাছ খেলে খিঁচুনি থেকে শুরু করে ডায়রিয়া এবং বমি হওয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে। তাই, কোনো মাছ খাওয়ার পরে অ্যালার্জি বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হলে চিকিৎসকের সাথে দ্রুত পরামর্শ করুন।
আরও জানুন: Heart Attack: আপনি কি প্রচুর টেনশান করেন? হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি এড়াতে অবশ্যই মেনে চলুন এই ৫ টি টিপস
৪. বর্তমান সময়ে ভেড়িতে মাছ চাষ করার প্রবণতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওই মাছে প্রচুর অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। যেগুলি পেটে গিয়ে ভালো ব্যাকটিরিয়াকে ধ্বংস করার পাশাপাশি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সংক্রমণ এবং অন্যান্য হজমের সমস্যা বাড়াতে পারে। তাই, এই মাছ খাওয়ার আগে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। এর পাশাপাশি বহু ক্ষেত্রে মাছ দূষিত জলের মাধ্যমে বিভিন্ন ধাতু, কীটনাশক এবং মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে চলে আসে। সেগুলিকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলে তা অন্ত্রের ব্যাকটিরিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। যার ফলে হজমের সমস্যা সহ পেট ফুলে যাওয়া, বমি বমি ভাব এবং ক্লান্তি পরিলক্ষিত হয়। এই কারণে ভালো জায়গা থেকে মাছ কিনে সেগুলি অবশ্যই ভালো ভাবে ধুয়ে তারপর রান্না করা উচিত।